বাংলাদেশেও বড়দিন উদযাপন
- By Jamini Roy --
- 25 December, 2024
আজ ২৫ ডিসেম্বর। বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে এবং নানান আয়োজনে দিনটি উদযাপিত হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গির্জাগুলো সেজেছে উৎসবের সাজে।
বড়দিন উপলক্ষে দেশের গির্জাগুলোকে রঙিন কাগজ আর বর্ণিল আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে। গির্জার ভেতরে ঝলমলে আলোর ক্রিসমাস ট্রি, প্রার্থনার আসর এবং বাইরে সান্তাক্লজ ও গো-শালার প্রতীকী স্থাপনা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
রাজধানীর বিভিন্ন গির্জায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই উৎসবের আমেজ শুরু হয়। শিশু থেকে প্রবীণ—সব বয়সের মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। যীশু খ্রিষ্টের কাছে প্রার্থনায় তারা দেশ, জাতি, এবং নিজেদের জীবনের কল্যাণ কামনা করেছেন।
বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, "আমরা সবাই এক পরিবারের অংশ। ধর্মীয় সংহতি আমাদের লক্ষ্য। সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠ শব্দগুলো আমরা চাই না। সবাই একত্রে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করাই আমাদের স্বপ্ন।"
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "ধর্মীয় পরিচয়ের আগে আমরা সবাই মানুষ। প্রত্যেক ধর্মই শান্তির বাণী প্রচার করে। সেই শান্তি নিজের মধ্যে স্থাপন করলেই সমাজ থেকে বিভেদ দূর হবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম সুন্দর শৈশব পাবে।"
কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথেড্রালে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, "সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের গর্ব। সব সম্প্রদায়ের মানুষ যেন নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করতে পারে, সে জন্য সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করছে।"
তিনি আরও আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দেশের অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন উদযাপনে আন্তরিক সহযোগিতা করবে। সবাই মিলে সুখী, সমৃদ্ধশালী ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করবে।
দেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগুরু এক বাণীতে বলেন, "দেশের সব অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের একতাবদ্ধ হতে হবে।" তিনি সমাজে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখার আহ্বান জানান।
রাজধানীর বিভিন্ন তারকা হোটেলেও বড়দিনের আলোকসজ্জা এবং কৃত্রিম ক্রিসমাস ট্রি স্থাপন করা হয়েছে। সান্তাক্লজের প্রতীকী উপস্থাপনও দর্শনার্থীদের মধ্যে আনন্দ ও উচ্ছ্বাস তৈরি করেছে।
বড়দিন শুধু খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের উৎসব নয়, এটি সম্প্রীতি, শান্তি এবং মানবতার বার্তা নিয়ে আসে। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মাঝে এই উৎসবের একতা ও সৌহার্দ্যের বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক—এটাই সবার প্রত্যাশা।